নিজেকে করার কিছু প্রশ্ন , যদি পারেন তো জবাব দিন , না পারলে আল্লাহর দিকে ফিরে আসুনঃ
১/ আপনি শুধু জুমআ’র নামাজই পড়েন কেন? আপনাকে কি আল্লাহ্ শুধু জুমার দিনেই আলো, বাতাস, পানি খাবার দিয়ে থাকেন? শনিবার দেন না? রবি, সোম, মঙ্গল সব দিনই তো দেন, সবদিন পরিপূর্ণ আল্লাহর নেয়মত ভোগ করেন, কিন্তু আল্লাহ্কে শুধু একদিনই স্মরণ করেন। এবার বলুন আপনি কি ঠিক পথে আছেন? এটা কি স্পষ্টত অপরাধ নয়? জবাব দিন , না হলে ফিরে আসুন।
২/ আপনি কি মনে করেন ইসলাম শুধু মসজিদ , মাদ্রাসায় , ইমাম, আলেমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ? সবার জন্য জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কি ইসলাম নয়? তাহলে আমাদের প্রিয় নবীর জীবনের প্রতিটি অংশই কেন ইসলাম জড়িত, কিংবা সাহাবীরা/৪ খলিফা কেনইবা ইসলামিক জীবন যাপন করেছেন? এবার নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি নিজেকেই ধোঁকা দিচ্ছেন না? জবাব দিন, না হলে ফিরে আসুন।
৩/ আপনি জানেন নামাজ পড়া ফরজ, আপনি এও জানেন নামাজ না পড়লে জাহান্নামে যেতে হবে, আপনার এটাও জানা আছে যে জাহান্নাম অত্যন্ত ভয়াবহ, দুনিয়ার কোন শাস্তিই জাহান্নামের ধারে কাছেও নেই, তবু কেন আপনি পড়ছেন না? আপনি কি জেনে বুঝে নিকৃষ্ট জায়গায় , ভয়াবহ শাস্তির জায়গায় ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন না? কেউ যদি জেনে বুঝে শাস্তি পেতে চায়, অথচ সে ইচ্ছা করলে শাস্তির বদলে চির সুখের স্থান পেতে পারে তাকে আপনি কি বলবেন ? চরম দুর্ভাগা বলবেন না? জবাব দিন , না হলে ফিরে আসুন।
৪/ আপনি তো জানেন জান্নাতে আরাম আয়েশের অভাব নেই। ইচ্ছা মত ভাল ভাল খাবার, পরমা সুন্দরী জান্নাতি হুর, যা যা ইছে করে সব পাওয়া যাবে জান্নাতে গেলে। দুনিয়ায় মানুষ কদিন বাঁচে? ৮০/১০০ বছর?আর আখিরাতের জীবন তো অনন্ত অসীম। আপনি এই ৮০-১০০ বছর আরামে কাটিয়ে দিতে চান আর অনন্ত জীবন ছেড়ে দিতে চান? এর থেকে বোকামি আর কি হতে পারে?
৫/ আপনি সবই মানেন সবই বোঝেন, কিন্তু অলসতা কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে পালন করেন না, কি করে আশা করেন জান্নাত পাওয়ার। অনেকে বলেন ভাই আমি তো জাহান্নামী, তাদেরকে বলতে ইচ্ছে করে ভাই জাহান্নামকে আপনি কি মনে করেন? সাধারন জেলখানা ? তাহলে শুনুন
নু’মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ
“কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তির শাস্তি হবে এই যে, তার দুই পায়ের তালুর নিচে আগুনের দু’টি অংগার রাখা হবে এবং তাতে তার মস্তিষ্ক সিদ্ধ হতে থাকবে। সে মনে করবে, তার চাইতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি আর কেউ হয়নি। অথচ সে-ই জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে হালকা শাস্তিপ্রাপ্ত।”
[ বুখারী: ৬৫৬২ , মুসলিম: ২১৩ ]
জবাব দিন , নাহলে ফিরে আসুন। যারা ফিরে আসবে এই মুহূর্ত থেকে তাদের জন্য আল্লাহ্ সুসংবাদ দিয়েছেন,
“আর যারা খারাপ কাজ করে, তারপরে তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসে, তবে নিশ্চয়ই তোমার রব এরপরও ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।” [ সূরা আ’রাফ ১৫৩]
“তারা কি দেখে না,তারা প্রতি বছর একবার কিংবা দুবার বিপদগ্রস্ত হয়? এরপরও তারা তওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না।” [ সূরা তাওবা ১২৬]
“সুতরাং তারা কি আল্লাহর নিকট তওবা করবে না? এবং তার নিকট ক্ষমা চাইবে না? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।” [সূরা মায়েদা ৭৪]
যারা ভাবে এখন পাপ করি পরে সময়মত তওবা করে নেব, তাদের সাধারণতঃ কোনদিনই তওবা করার সৌভাগ্য পাবে না।
আল্লাহ্ বলেন,
“আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।” [সূরা নিসা ১৮]
তাই আমার ভাই ও বোনেরা ফিরে আসুন , এখনই, এখনই এবং এখনই। তওবা করে ফিরে আসুন। আল্লাহর কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করুন।
লিখেছেনঃ সাইফ
প্রচারে আন-নূর ইসলামিক ম্যারেজ মিডিয়া