স্ত্রীর হক আদায় না করে তাকে আটকে রাখা প্রসঙ্গে

প্রশ্ন : আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তি দু’টি বিবাহ করেছেন। তিনি প্রথম স্ত্রীকে তার বাপের বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি তার সেই প্রথম স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ প্রদান করেন না। তার সাথে কোন সম্পর্কও রাখেন না। আবার তাকে একেবারে বিদায়ও করছেন না।

এমতাবস্হায় সেই মহিলাটি প্রায় আট বৎসর যাবত তার বাপের বাড়ীতে দুঃখ-কষ্ট করে জীবনযাপন করছে। অন্যকোন জায়গায় বিবাহ বসারও তার উপায় নাই। প্রশ্ন হল–শরীয়তের বিধান মতে সেই ব্যক্তির হুকুম কী এবং এমন ব্যক্তি থেকে সেই মহিলার পরিত্রানের উপায় কী????

 

উত্তর শরীয়তে একাধিক বিবাহ করা বৈধ থাকলেও তা ঢালাওভাবে নয়। বরং অনেক শর্ত-শরায়েত রয়েছে। যেমন, সকলের ভরণ-পোষণ প্রদানের ক্ষমতা রাখা, সকলের যৌন চাহিদা মেটানোর উপর সক্ষম হওয়া, সকলের মাঝে ভরণ-পোষণ ও রাত্রি যাপন ইত্যাদিতে পূর্ণ সমতা রক্ষা করা ইত্যাদি। এ সমস্ত বিষয়ে সমতা রক্ষা করা ওয়াজিব। আর যদি কোন ব্যক্তি এ ওয়াজিব তরক করে, তাহলে সে ফাসিক হয়ে যায়–যার পরকালীন শাস্তি অনেক কঠিন। আর দুনিয়াবীভাবে তার বিহিত ব্যবস্থা করা অভিভাবকগণের কর্তব্য।

সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত উক্ত ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে ফাসিক ও অপরাধী বলে গণ্য হবেন। দুনিয়াতেও তার এ অপরাধের বিচার করতে হবে এবং পরকালীনও তিনি কঠিন শাস্তির ভাগী হবেন।

যদি সেই ব্যক্তি সেই স্ত্রীর হক কোনভাবে আদায় না করেন এবং স্ত্রী তার থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করতে চান, তাহলে তিনি বা তার উকিল তার স্বামী থেকে খোলা তালাক নিয়ে নিবেন। যদি স্বামী তাতেও রাজী না হন, তাহলে স্ত্রী এবং তার অভিভাবকগণ কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন। অথবা তারা কোন শরয়ী মুফতী বোর্ডের শরণাপন্ন হয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বললে তারা বিবাহ বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্হা দিতে পারবেন। (এজন্য ঢাকা বসুন্ধরা বা বেফাক মুফতী বোর্ড কিংবা অন্যকোন মুফতী বোর্ডের শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে।)

[প্রমাণসমূহ : তাফসীরে মাজহারী, ২ : ২৫৭/ ফাতাওয়া শামী, ৩ : ৫৭৫/ আহসানুল ফাতওয়া, ৫ : ৪১১/ হীলায়ে নাজিযা, ৭৩

Share: