প্রশ্নঃ রোযাদারের নাকে, কানে ও চোখে ড্রপ ব্যবহার করার বিধান কি?
——————————–
উত্তরঃ নাকের ড্রপ ব্যবহার করলে যদি তা পেটে পৌঁছে তবে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
কেননা লাক্বীত বিন সাবুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে,
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেন,
وَبَالِغْ فِي الِاسْتِنْشَاقِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ صَائِمًا
ছিয়াম অবস্থায় না থাকলে ওযুর ক্ষেত্রে নাকে অতিরিক্ত পানি নিবে।
[আবু দাঊদ, অধ্যায়: নাক ঝাড়া, ১৪২। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ পবিও্বতা, অনুচ্ছেদঃ আঙ্গুল খিলাল করার বর্ণনা। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুচ্ছেদঃ নাকে পানি নেয়ায় বাড়াবাড়ি করা। ইবনু মাজাহ্, অধ্যায়: পবিত্রতা, অনুচ্ছেদ: আঙ্গুল খিলাল করার বর্ণনা। ]
অতএব পেটে পৌঁছে এরকম করে রোযাদারের নাকে ড্রপ ব্যবহার করা জায়েয নয়।
রোযাদার কুলি করা বা নাকে পানি নেয়ার কারণে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে পানি পেটে পৌঁছে যায়, তবে তার রোযা ভঙ্গ হবে না। কেননা এতে তার কোন ইচ্ছা ছিল না। আল্লাহ্ বলেন,
ভুলক্রমে তোমরা যা করে ফেল সে সম্পর্কে তোমাদের কোন গুনাহ্ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর যার ইচ্ছা করে তার কথা ভিন্ন।(সূরা আহযাবঃ ৫)
আরেকটি বিষয় নাকে ভাপের ধোঁয়া টানলে ধোঁয়ার কিছু অংশ পেটে প্রবেশ করে আর তা নিজ ইচ্ছায় হলে, এতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
চোখে ড্রপ ব্যবহার করা সুরমা ব্যবহার করার ন্যায়। কানে ,চোখে ড্রপ ব্যবহার করে উহা পেটে পৌঁছানোর ইচ্ছা করা হয় না; বরং এতে উদ্দেশ্য হচ্ছে শুধু ড্রপ ব্যবহার করা।এতে রোযা নষ্ট হবে না।
এমনিভাবে রোযা অবস্থায় শ্বাসকষ্টের কারণে স্প্রে(nabulijer) ব্যবহার করলে এবং স্প্রে নাকে প্রবেশ করে কিন্তু পেট পর্যন্ত পৌঁছে না। তাই রোযা রেখে ইহা ব্যবহার করতে কোন অসুবিধা নেই। এতে রোযা ভঙ্গও হবে না। কেননা এটা এমন বস্তু যা উড়ে বেড়ায় নাকে প্রবেশ করে এবং বিলীন হয়ে যায়, এর অংশ বিশেষ পেটের মধ্যে প্রবেশ করে না। তাই এদ্বারা ছিয়াম ভঙ্গ হবে না।
শ্বাস কষ্ট দূর করার জন্য যদি মুখে পাইপ লাগিয়ে অক্সিজেনের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে চলমান করা হয়, এবং তা পেটে পৌঁছে, তাতে রোযার কোন ক্ষতি হবে না। কেননা উহা পানাহারের অন্তর্ভূক্ত নয়।
–
(ফতোয়া আরকানুল ইসলাম থেকে)
মূল: আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উছাইমীন (রাহ:)
অনুবাদক: শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী