সারাদিন অফিস করে বা ক্লাস করে বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে ঝুলে ঝুলে বাসার দরজার কলিংবেল টেপার সময় এক অদ্ভুত শুন্যতা কাজ করে বুকের ভেতর । এই সময়টা,মানে অফিস বা ক্লাস থেকে ফেরার পরের এই সময়টা খুবই নাজুক। যারা মাঝে মধ্যে পর্ণ মুভি দেখে বা মাস্টারবেট করে তাদের এই সময় শয়তান কুমন্ত্রণা দেয়, “যা ব্যাটা পর্ণ দেখ বা মাস্টারবেট কর , মেন্টাল স্ট্রেস দূর হয়ে যাবে”।
অনেকেই শয়তানের এই কুমন্ত্রনায় সাড়া দেয় । পর্ণ/মাস্টারবেশনের ফ্যান্টাসীর জগতে হারিয়ে ভুলতে চায় জীবনের সব অবসাদ । ক্ষনিকের জন্য অবসাদ দূর হলেও একটু পরেই ফিরে আসে শতগুন শক্তিশালী হয়ে ।
ইসলাম কি চমৎকার সমাধানই না দিয়েছে এই সমস্যার !
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন স্বামী যখন ঘরে ফিরবে তখন যেন স্ত্রী দরজা খুলে দেয় । পরস্পর সালাম বিনিময় করে । স্ত্রী যেন স্বামীর জন্য সুন্দর করে সাজে ।
স্ত্রীর হাসিমুখ, মিষ্টি কন্ঠের সালাম বা দুটো নরম কথা , একটু আলতো স্পর্শ, সারাদিনের পরিশ্রমে ক্লান্ত,বিধ্বস্ত স্বামীকে একনিমিষেই দিতে পারে দু দন্ড শান্তি, নতুন করে বেঁচে থাকার প্রেরণা ,চোখকে করে দিতে পারে শীতল । ।
“…… তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সঙ্গী সঙ্গিনীদের বানিয়েছেন, যাতে করে তোমরা তাদের কাছ থেকে সুখ শান্তি লাভ করতে পারো ”
( আল কুরআনঃ ৩০;২১)
পাশ্চাত্যের প্রোপ্যাগান্ডায় ব্রেইন ওয়াশড হয়ে নারী স্বাধীনতার নামে আমরা নারীকে ঘর থেকে বের করে রাস্তায় এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছি পুরুষের প্রতিপক্ষ হিসেবে । কর্মক্ষেত্রের কর্কশ,কঠোর পরিবেশ নারীর কোমলতা দূর করে দিচ্ছে । স্বামীর মনের শুন্যতা আর দূর করবে কি, দিনশেষে বেচারী নিজেই ঘরে ফিরছে শূন্য এক মন নিয়ে । কেউই কাউকে পর্যাপ্ত সময় কাছে পাচ্ছে না , দূরত্ব বাড়ছে একটু একটু করে । পরকীয়া,পর্ণ আসক্তির দুয়ার খুলে যাচ্ছে ।
অবিবাহিত ভাইরা এখন হাউকাউ শুরু করবেন আমাদের তো বউ নেই, আমাদের কি হবে ?
ভাই,আমাদের সমাজে বিয়েকে করে ফেলা হয়েছে অনেক অনেক কঠিন । হাউকাউ না করে, বিয়ে নিয়ে ফ্যান্টাসীতে না ভুগে আপনাদের চেষ্টা করতে হবে বিয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা । বিয়ে আপনার পর্ণ আসক্তি বা মাস্টারবেট আসক্তি একেবারে দূর করবে এটা ভাবলে ভুল করবেন । বিয়ে কিছুটা সমাধান দিতে পারবে কিন্তু পুরোটা না । তাই,লড়াইটা শুরু করতে হবে এই মুহূর্ত থেকেই । বিয়ের জন্য বসে থাকলে চলবে না ।
ঘরে ফেরার পরে খুব দ্রুত ঢুকে পড়বেন বাথরুমে । ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে নিবেন ভালোমতো । স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে যতোটা কম স্পর্শ করা যায় ততোই ভালো । বাথরুমে কাপড় সম্পূর্ণ না খুলে ফেলে কিছু কাপড় শরীরে রেখে গোসল করা উচিত ।
গোসল শেষে বাথরুম থেকে বের হয়ে মোবাইলে বা সাউন্ডসিস্টেমে চালিয়ে দিন সুন্দর সুন্দর এই () তিলাওয়াত গুলো । আল্লাহ্র কালাম আপনাকে ইনশা আল্লাহ্ রক্ষা করবে শয়তানের ধোঁকা থেকে আর সেই সংগে মেন্টাল স্ট্রেস কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করবে ।
“…… আমি কুরআনে যা কিছু নাযিল করেছি তা হচ্ছে ঈমানদারদের জন্য তাদের রোগের উপশমকারী ও রহমত ”। (আল কুরআনঃ ১৭;৮২)
হালকা একটু ন্যাপ নিন । ছোট ভাইবোন বা পিচ্চিদের সঙ্গে খুনসুটি করতে পারেন । মানসিক চাপ কমাতে এগুলো খুব সাহায্য করে ।
হোস্টেলে বা হলে পরিবার ছেড়ে দূরে থাকলে এই সময় বাবা মা’কে ফোন করুন । খোঁজ খবর নিন । ইমো,ভাইভার এগুলোর সদ্ব্যবহার করুন । মন খুলে কথা বলুন । মেন্ট্রাল স্ট্রেস দূর হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ্ ।
কার্টেসী : পর্নোগ্রাফি: মানবতার জন্য হুমকি