ছহীহ হাদীছ থেকে চয়নকৃত দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় দো‘আ সমূহ
মোট: ৬৭টি
১। রাতে ঘুমাবার দো‘আ :
আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী’ (আন-নাবা ৯)।
নিদ্রা মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে দূর করে তার অন্তর ও মস্তিষ্ককে এমন স্বস্তি ও শান্তি দান করে যার বিকল্প দুনিয়ার কোন শান্তি হ’তে পারে না। নিদ্রা বা ঘুম মানব জাতীর জন্য আল্লাহর বড় নে‘মত। শোয়ার সময় বিছানাটা ঝেড়ে নেওয়ার জন্য নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন’।[1]
বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শোয়ার সময় ডান পার্শ্বের উপর শুতেন, অতঃপর বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আসলাম্তু নাফ্সী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহী ইলাইকা ওয়া ফাউওয়ায্তু আমরী ইলাইকা ওয়ালজা’তু যাহরী ইলাইকা রাগবাতাওঁ ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজাআ ওয়ালা মানজাআ মিনকা ইল্লা ইলাইকা আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনঝালতা ওয়া বি নাবিইয়্যিকাল্লাযী আরসালতা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি নিজেকে তোমাতে সমর্পণ করলাম, তোমার দিকে মুখ ফিরালাম, আমার কাজ তোমার প্রতি ন্যস্ত করলাম এবং তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। তোমার নাযিলকৃত কিতাবের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার প্রেরিত নবীর প্রতি ঈমান আনলাম’।[2]
ফযীলত : নবী করীম (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন ওযূ করবে তোমার ছালাতের ওযূর ন্যায়। অতঃপর তোমার ডান পার্শ্বের উপরে শুবে এবং উক্ত দো‘আ বলবে। তারপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, যদি তুমি সেই রাতেই মৃত্যু বরণ কর, তবে তুমি ইসলামের উপর মৃত্যু বরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে উঠ, তবে তুমি কল্যাণের সাথে উঠবে’।[3]
নবী করীম (ছাঃ) যখন রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, তখন বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বিসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তোমারই নামে আমি মৃত্যুবরণ করছি এবং তোমারই দয়ায় পুনরায় জীবিত হব’।[4]
রাতে ঘুমাবার সময় ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করলে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘুম থেকে উঠা পর্যন্ত একজন পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়। ফলে শয়তান তার নিকট আসতে পারে না।[5]
নবী করীম (ছাঃ) রাতে ঘুমাবার সময় সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক্ব, সূরা নাস পড়তেন।[6]
রাসূল (ছাঃ) শোয়ার সময় গালের নিচে ডান হাত রেখে নিম্নের দো‘আটিও পড়তেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ক্বিনী ‘আযা-বাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবা-দাকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার আযাব হ’তে রক্ষা কর, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে কবর হ’তে উঠাবে’।[7]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ দু’টি আয়াত পড়বে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে’।[8]
নবী করীম (ছাঃ) শোয়ার সময় ফাতেমা (রাঃ)-কে ৩৩ বার সুব্হা-নাল্লাহ, ৩৩ বার ‘আল্-হাম্দুলিল্লাহ’, ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়তে বলেছিলেন।[9]
২। ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় পেলে দো‘আ :
উচ্চারণ: আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি মিন গাযাবিহী ওয়া ‘ইক্বা-বিহী ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহী ওয়া মিন হামাঝা-তিশ শাইয়া-ত্বীনি ওয়া আইয়াহযুরূন।
অর্থ: ‘আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্য সমূহের মাধ্যমে তাঁর গোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দাদের অপকারিতা হতে, শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে এবং তাদের উপস্থিতি হতে।[10]
ফযীলত : নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায় তখন সে যেন উক্ত দো‘আ পাঠ করে। ফলে কোন কুমন্ত্রণা তার ক্ষতি করতে পারবে না’।[11]
৩। ঘুমন্ত অবস্থায় ভাল বা মন্দ স্বপ্ন দেখলে করণীয় :
ভাল স্বপ্ন দেখলে করণীয়-
(১) ‘আল্-হাম্দু লিল্লাহ’ পড়া (২) সুসংবাদ গ্রহণ করা (৩) প্রিয় ব্যক্তির কাছে বর্ণনা করা।
মন্দ স্বপ্ন দেখলে করণীয়-
(১) ‘আ‘ঊযুবিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বানির রাজীম’ তিন বার পড়া (২) বাম দিকে তিন বার থুক ফেলা (৩) পার্শ্ব পরিবর্তন করে শোয়া (৪) কারো কাছে প্রকাশ না করা।[12]
৪। ঘুম থেকে উঠার পর দো‘আ:
উচ্চারণ: আল-হামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না বা‘দা মা আমা-তানা ওয়া ইলাইহিননুশূর।
অর্থ: ‘সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করলেন এবং ক্বিয়ামতের দিন তাঁরই নিকটে সকলকে ফিরে যেতে হবে।[13]
৫। শৌচাগারে প্রবেশের দো‘আ:
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল খুবছি ওয়াল খাবা-ইছ।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি মন্দ কাজ ও শয়তান থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[14]
৬। শৌচাগার হ’তে বের হওয়ার দো‘আ :
উচ্চারণ: গুফরা-নাকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তোমার নিকট ক্ষমা চাই’।[15]
কুলুখ: পানি না পাওয়া গেলে পায়খানা বা প্রস্রাবের পর মাটি, পাথর, ইটের কুচি ইত্যাদি দিয়ে কুলুখ করবে। হাড় বা শুকনো গোবর দ্বারা কুলুখ করা যাবে না। কাপড়ের টুকরো বা টিসু পেপার দিয়েও কুলুখ করা যায়। কিন্তু পানি পাওয়া গেলে কুলুখ ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ একই সাথে পানি ও কুলুখ ব্যবহার ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়।
৭। খাবার গ্রহণের সময় দো‘আ :
কুরআনের বাণী- ‘আল্লাহ তোমাদেরকে যে সব হালাল ও পবিত্র বস্ত্ত দিয়েছেন তা তোমরা আহার কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদতকারী হয়ে থাক’ (সূরা নাহল ১১৪)।
মানুষ তার মানবীয় জীবনে আল্লাহর নে‘মত আহারের মাধ্যমে বেঁচে থাকে বিধায় তা গ্রহণের সময় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা আমাদের কর্তব্য।
‘বিসমিল্লাহ’ বলে ডান হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে।[16] নিম্নের দো‘আটিও পড়া যায়-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বা-রিক্ লানা ফীহি ওয়া আত্ব‘ইম্না খাইরাম্ মিন্হু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে এতে বরকত দিন, ভবিষ্যতে আরো উত্তম খাদ্য দিন’।[17]
প্রথমে ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে ভুলে গেলে নিম্নের দো‘আটি পড়তে হয়-
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হি আউওয়ালাহূ ওয়া আ-খিরাহূ। অর্থ: ‘আল্লাহর নামে খাওয়ার শুরু ও শেষ’।[18]
৮। খাবার শেষে দো‘আ :
উচ্চারণ: আল-হামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব‘আমানী হা-যাত্ ত্বা‘আ-মা ওয়া রাযাক্বানীহি মিন্ গাইরি হাওলিম্ মিন্নী ওয়া লা কুউওয়াতিন।
অর্থ: ‘সেই আল্লাহর যাবতীয় প্রশংসা যিনি আমাকে পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা ছাড়াই খাওয়ালেন ও রূযী দান করলেন।[19] মু‘আয (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘ কোন মুসলমান খাবার বস্ত্ত খাওয়ার পর অথবা পানীয় দ্রব্য পানের পর যদি দো‘আটি পড়ে, তবে তার পূর্বের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়’।[20] অথবা,
উচ্চারণ: আল-হামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব‘আমা ওয়া সাক্বা ওয়া সাউওয়াগাহূ ওয়া জা‘আলা লাহূ মাখরাজা।
অর্থ: ‘সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি খাওয়ালেন, পান করালেন, অতি সহজে তা উদরস্থ করালেন এবং পরিশেষে অপ্রয়োজনীয় অংশ বের হবার ব্যবস্থা করলেন’।[21]
৯। খাওয়া শেষে দস্তরখানা উঠানোর সময় দো‘আ:
উচ্চারণ: আল-হামদু লিল্লা-হি হাম্দান্ কাছীরান্ ত্বাইয়্যিবাম্ মুবা-রাকান্ ফীহি গাইরা মাকফিইয়্যিন ওয়ালা মুওয়াদ্দা‘ইন ওয়ালা মুস্তাগ্নান্ ‘আনহু রাববানা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার, অধিক অধিক প্রশংসা, যা পবিত্র ও বরকতময়। হে প্রভু! তোমার অনুগ্রহ হ’তে মুখ ফিরানো যায় না, আর এর অন্বেষণ ত্যাগ করা যায় না এবং এর প্রয়োজন হ’তে মুক্ত থাকা যায় না।[22]
১০। দুধপান করার সময় দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বা-রিক্ লানা ফীহি ওয়া ঝিদ্না মিনহু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে এতে বরকত দিন, ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি করে দিন’।[23]
১১। মেযবানের জন্য মেহমানের দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বা-রিকলাহুম ফীমা রাঝাক্বতাহুম ওয়াগফিরলাহুম ওয়ার হামহুম।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছ তাতে তুমি বরকত দান কর, তাদেরকে ক্ষমা করে দাও এবং তাদের উপর রহমত বর্ষণ কর’।[24]
১২। দরজা-জানালা বন্ধের সময় পঠিত দো‘আ :
দরজা-জানালা বন্ধের সময় এবং খাদ্যপাত্র ঢাকার সময় ‘বিস্মিল্লাহ’ বলবে।[25]
জাবের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ঘরের দরজা সমূহ বন্ধ কর, আর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে তোমাদের মশকের (পানির পাত্র) মুখ বন্ধ কর এবং ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাদ্যপাত্র ঢেকে রাখ। অতঃপর শোয়ার সময় বাতিগুলো নিভিয়ে দাও।[26]
১৩। বাড়ী থেকে বের হওয়ার দো‘আ :
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লা-হি, লা-হাওলা ওয়ালা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হি।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নামে বের হচ্ছি, আল্লাহর উপর ভরসা করছি। আল্লাহ ছাড়া কোন অভিভাবক ও শক্তি নেই’।[27]
উম্মে সালমা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখনই আমার ঘর হ’তে বের হ’তেন আকাশের দিকে মাথা উঠিয়ে বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা আন আযিল্লা আও উযাল্লা আও আযলিমা আও উযলামা আও আজহালা আও ইউজহালা ‘আলাইয়্যা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই বিপথগামী হওয়া বা বিপদগামী করা, অত্যাচার করা বা অত্যাচারিত হওয়া, অজ্ঞতা প্রকাশ করা বা অজ্ঞতা প্রকাশের পাত্র হওয়া হ’তে’।[28]
১৪। বাড়ীতে প্রবেশের দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাল মাওলিজি ওয়া খাইরাল মাখরাজি, বিসমিল্লা-হি ওয়ালাজনা ওয়া আলাল্লা-হি রাবিবনা তাওয়াক্কালনা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আগমন ও নির্গমনের মঙ্গল চাই। তোমার নামেই আমরা প্রবেশ করি ও বের হই। আমাদের প্রভু আল্লাহর উপর ভরসা করলাম’। অতঃপর পরিবারের লোকদের প্রতি সালাম দিতে হবে।[29]
১৫। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের বিদায় দানের দো‘আ :
উচ্চারণ: আসতাওদি‘উল্লা-হা দীনাকা ওয়া আমা-নাতাকা ওয়া খাওয়া-তীমা ‘আমালিকা ওয়া ঝাউওয়াদাকাল্লা-হুত তাক্বওয়া ওয়া গাফারা যামবাকা ওয়া ইয়াসসারা লাকাল খাইরা হাইছু মা-কুন্তা।
অর্থ: তোমার দ্বীন, তোমার আমানত, তোমার কাজের শেষ পরিণতি আল্লাহর উপর সোপর্দ করলাম। আল্লাহ যেন তোমার তাকবওয়া বৃদ্ধি করে দেন। তোমার গোনাহ ক্ষমা করে দেন আর তুমি যেখানেই থাক যে কাজই কর কল্যাণকর দিক যেন আল্লাহ তোমাকে সহজ করে দেন’।[30]
১৬। নতুন কাপড় পরিধান কালে দো’আ :
উচ্চারণ: আল্-হামদু লিল্লা-হিল্লাযী কাসা-নী হাযা ওয়া রাঝাক্বানীহি মিন গাইরি হাওলিম্ মিন্নী ওয়ালা ক্বুউওয়াতিন।
অর্থ: ‘সেই আল্লাহর সমস্ত প্রশংসা, যিনি আমাকে বিনাশ্রমে ও শক্তি প্রয়োগ ব্যতীতই রূযী দান করেছেন এবং এই পোষাক পরিধান করিয়েছেন।১৩৪ কাপড় খুলে রাখার সময় ‘বিসমিল্লা-হ’ বলতে হয়।[31]
১৭। আয়না দেখার দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা হাসসান্তা খালক্বী ফাআহসিন খুলূক্বী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছ, তুমি আমার চরিত্র সুন্দর করে দাও’।[32]
১৮। বিবাহের খুৎবা :
marriage_khutba
১৯। বিবাহ পড়ানোর পর বর-কনের জন্য বিবাহ আসরে পঠনীয় দো‘আ :
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, যখন কোন ব্যক্তি বিবাহ করত নবী করীম (ছাঃ) তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এই দো‘আ করতেন-
উচ্চারণ: বা-রাকাল্লা-হু লাকা ওয়া বা-রাকা ‘আলাইকা ওয়া জামা‘আ বাইনাকুমা ফী খাইর।
অর্থ: ‘এই বিবাহে আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুক এবং তোমাদের উভয়ের উপর বরকত হোক আর তোমাদের দু’জনকে অতি উত্তমরূপে একত্রে অবস্থান করার ব্যবস্থা করে দিন’।[33]
২০। বাসর ঘরে পাঠ করার দো‘আ :
বাসর রাতে স্বামী স্বীয় স্ত্রীর কপালে হাত রেখে বলবে-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরামা জাবাল্তাহা ‘আলাইহি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররিমা জাবালতাহা ‘আলাইহ।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট তার মঙ্গল ও যে মঙ্গলের উপর তাকে সৃষ্টি করেছ তা প্রার্থনা করছি। আর তার অমঙ্গল ও যে অমঙ্গলের উপর তাকে সৃষ্টি করেছ তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি’।[34]
উল্লেখ্য, চতুষ্পদ জন্তু কিংবা কোন খাদেম গয় করে ও উক্ত দো‘আ পড়তে হয়।[35]
২১। বাসর রাতে দু’রাক‘আত ছালাত পড়া এবং দো‘আ :
বাসর রাতে স্বামী তার স্ত্রীকে পিছনে নিয়ে জামা‘আত সহকারে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করবে এবং এই দো‘আ পাঠ করবে,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বা-রিক লী ফী আহলী ওয়া বা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লা-হুম্মাজমা‘ বাইনানা মা জামা‘তা বিখাইরিন ওয়া ফাররিক্ব বাইনানা ইযা ফাররাক্ব্তা ইলা খাইর।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দান কর এবং তাদের স্বার্থে আমার মাঝে বরকত দাও। হে আল্লাহ! তুমি যা ভাল একত্রিত করেছ তা আমাদের মাঝে একত্রিত কর। আর যখন কল্যাণের দিকে বিচ্ছেদ কর তখন আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ কর’।[36]
২২। স্ত্রীর মিলনের দো‘আ :
স্ত্রী সহবাসের পূর্বে বলতে হবে-
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা জান্নিব্নাশ্ শাইত্বা-না ওয়া জান্নিবিশ্ শাইত্বা-না মা রাঝাক্বতানা।
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখ’।[37]
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলনের পূর্বে যদি উক্ত দো‘আ বলে তারপর তাদের কিসমতে কোন সন্তান থাকলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।[38]
২৩। সকাল-সন্ধ্যায় যেসব দো‘আ পড়তে হয় :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশশাহা-দাতি ফা-ত্বিরাস্ সামা-ওয়াতি ওয়ালআরযি রাববা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালীকাহূ, আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আনতা আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি নাফ্সী ওয়া মিন্ শাররিশ শাইত্বানি ওয়া শিরকিহী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি অদৃশ্য ও দৃশ্যকে জানো, আসমান ও যমীনের তুমি স্রষ্টা, প্রত্যেক বস্ত্তর তুমি প্রতিপালক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ছাড়া কোন মা‘বুদ নেই। আমি আমার মনের কুমন্ত্রণা, শয়তানের কুমন্ত্রণা ও তার শিরক হ’তে আশ্রয় চাই’।[39]
নবী করীম (ছাঃ) উক্ত দো‘আটি সকাল-সন্ধ্যা এবং শয্যা গ্রহণের সময় পড়ার জন্য আবুবকর (রাঃ)-কে বলেছিলেন।[40]
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকালাহূ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল্ হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।
অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই, তাঁরই রাজত্ব, সমস্ত প্রশংসা তাঁরই। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাশীল’।[41]
আবু আইয়্যাশ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে উঠে উক্ত দো‘আ পড়বে তার জন্য ইসমাঈল বংশীয় একটি দাস মুক্ত করার সমান ছওয়াব হবে। তার জন্য দশটি পুণ্য লিখা হবে, দশটি পাপ ক্ষমা করা হবে, দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে এবং শয়তান হ’তে হেফাযতে থাকবে।[42]
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লাহুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূম ওয়া আতূবু ইলাইহ্।
অর্থ: ‘আমি সেই মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। যিনি ছাড়া কেউ ইবাদতের যোগ্য নয়। যিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। আমি তাঁরই কাছে তওবা করছি’।[43]
উচ্চারণ: লা হাওলা ওয়ালা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
অর্থ: ‘নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি আল্লাহ ছাড়া’।[44]
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় একশত বার বলবে ‘ সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি’ – ক্বিয়ামতের দিন এটা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ বাক্য নিয়ে কেউ উপস্থিত হ’তে পারবে না। কেবল সেই ব্যক্তি ব্যতীত, যে এর অপেক্ষা অধিকবার বলবে।[45]
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফীবাদানী, আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী সাম‘ঈ, আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাছারী লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার দেহকে হেফাযত কর। হে আল্লাহ! তুমি আমার শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তিকে হেফাযত কর। তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘র্বূদ নেই’।[46]
আমল: উক্ত দো‘আটি সকালে তিন বার ও সন্ধ্যায় ৩ বার পড়তে হবে।[47]
নবী করীম (ছাঃ) নিম্নের দো‘আটি সকাল-সন্ধ্যা পড়তেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল্ ‘আফওয়া ওয়াল ‘আ-ফিইয়াতা ফিদ্ দুনইয়া ওয়াল্ আখিরাতি, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল্ ‘আফওয়া ওয়াল ‘আ-ফিইয়াতা ফী দ্বীনী ওয়া দুন্ইয়া-ইয়া ওয়া আহলী ওয়া মা-লী, আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী ওয়া আ-মিন রাও‘আতী, আল্লা-হুম্মাহ্ফাযনী মিন্ বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফী ওয়া ‘আই ইয়ামীনী ওয়া ‘আন শিমা-লী ওয়া মিন্ ফাওক্বী ওয়া আ‘ঊযু বি‘আযমাতিকা আন্ উগতা-লা মিন তাহ্তী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার দ্বীন, দুনিয়া, পরিবার ও সম্পদের অনিষ্টতা হ’তে নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমার দোষ ঢেকে রাখ এবং ভয় থেকে নিরাপদ রাখ। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সামনে থেকে, পিছন থেকে, ডান-বাম থেকে এবং উপর থেকে হেফাযত কর। আর আমি তোমার মর্যাদার নিকটে আশ্রয় চাই মাটিতে ধ্বসে যাওয়া হ’তে’।[48]
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ঝাওয়া-লি নি‘মাতিকা ওয়া তাহাওউলি ‘আ-ফিয়াতিকা ওয়া ফুজা-আতি নিক্বমাতিকা ওয়া জামীঈ সাখাত্বিকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার প্রদত্ত নিয়ামতের হ্রাস, তোমার’ দেওয়া সুস্থতার পরিবর্তন, তোমার শাস্তির হঠাৎ আগমণ এবং তোমার সমস্ত অসন্তোষ হ’তে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[49]
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) চিন্তাযুক্ত অবস্থায় বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল্ হাম্মি ওয়াল্ হাযানে ওয়াল্ ‘আজঝি ওয়াল কাসালি ওয়ালজুব্নি ওয়াল বুখলি ওয়া যালা‘ইদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-লি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট চিন্তা, শোক, অপারগতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা, ঋণগ্রস্ততা ও মানুষের রোষানল থেকে আশ্রয় চাই’।[50]
নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন সকালে ও সন্ধ্যায় তিন বার করে নিম্নের দো‘আটি পড়বে তাকে কোন বালা-মুছীবত স্পর্শ করবে না-
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হিল্লা-যী লা ইয়াযুররু মা‘আসমিহী শাইয়ুন ফীল আরযি ওয়া লা ফিসসামা-য়ি ওয়া হুয়াস সামী‘উল ‘আলীম।
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, যাঁর নামে শুরু করলে আসমান ও যমীনের কোন বস্ত্তই কোনরূপ ক্ষতিসাধন করতে পারে না। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’।[51]
উম্মে সালমা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) ফজরের ছালাত শেষে বলতেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা ‘ইলমান নাফিআওঁ ওয়া ‘আমালাম্ মুতাক্বাববালাওঁ ওয়া রিঝক্বান ত্বাইয়্যিবান।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে উপকারী জ্ঞান, কবুলযোগ্য আমল ও হালাল রূযী প্রার্থনা করছি।[52]
উচ্চারণ: আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্ তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাক্বা।
অর্থ: ‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমা দ্বারা তার অনিষ্টকর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাচ্ছি’।[53]
২৪। শয়তান এবং তার কুমন্ত্রণার প্রতিকার :
‘যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহ’লে সাথে সাথে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি শ্রবণকারী মহাজ্ঞানী’ (আ‘রাফ ২০০)।
শয়তান এবং তার কুমন্ত্রণা হ’তে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য পড়তে হবে-
উচ্চারণ: আ‘ঊযুবিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই বিতাড়িত শয়তান হ’তে’।[54]
ছালাতের ভিতর শয়তান কুমন্ত্রণা দিলে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে ‘আঊযুবিল্লাহ’ পড়ে বাম দিকে তিনবার থুক ফেলতে হবে।[55]
কুরআন তেলাওয়াতের সময় : আল্লাহ বলেন, ‘যখন তুমি কুরআন পাঠ আরম্ভ করবে, বিতাড়িত শয়তান হ’তে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে’ (নাহল ৯৮)।
২৫। দ্বীনের উপর টিকে থাকার জন্য দো‘আ :
উচ্চারণ: ইয়া-মুক্বাল্লিবাল কুলূবি ছাবিবত ক্বালবী ‘আলা দ্বীনিকা।
অর্থ: ‘হে অন্তর আবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর দৃঢ় রাখ’।[56]
২৬। প্রার্থনা কবুল হওয়ার জন্য দো‘আ :
উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকালাহূ লাহুল্ মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। সুবহানাল্লা-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি ওয়া লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই সাম্রাজ্য, তাঁরই সমস্ত প্রশংসা, তিনি সকল বস্ত্তর উপর ক্ষমতাশীল। আমি আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং তাঁর প্রশংসা করছি। আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কোন কৌশল নেই আর কোন ক্ষমতাও নেই’।[57]
উবাদা ইবনু ছামেত (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে জাগ্রত হয়ে উক্ত দো‘আ পাঠ করে সে যে দো‘আ করবে তা কবুল হয়। যে ওযূ করে ছালাত পড়ে আল্লাহ তার সে ছালাত কবুল করেন।[58]
২৭। গ্রহণযোগ্য ইবাদত করার তাওফীক্ব চেয়ে দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আ‘ইন্নী ‘আলা-যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ‘ইবা-দাতিকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সাহায্য কর আমি যেন তোমার শুকরিয়া আদায় করতে পারি এবং ভালভাবে তোমার ইবাদত করতে পারি’।[59]
প্রত্যেক ছালাতের পর উক্ত দো‘আটি পাঠ করার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মু‘আয (রাঃ)-কে অছিয়ত করেন।[60]
২৮। দুনিয়ার ফিত্না ও কবর আযাব থেকে বাঁচার দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ আরযালিল ‘উমুরি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিতনাতিদ্ দুনইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই। কৃপণতা থেকে আশ্রয় চাই, বৃদ্ধ অবস্থার কষ্ট থেকে মুক্তি চাই। দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে বাঁচার জন্য আশ্রয় চাই’।[61]
২৯। ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দো‘আ বা সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আন্তা রাববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি মা ছানা‘তু আবূউলাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা ওয়া আবূউ বিযামবী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা-ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া কোন প্রভু নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি সাধ্যমত তোমার কাছে দেওয়া ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতি পালনে সচেষ্ট আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। আমাকে যে নে‘মত দান করেছ তা স্বীকার করছি এবং আমি আমার পাপ সমূহ স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া কেউ ক্ষমাকারী নেই’।[62]
ফযীলত : নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি উক্ত দো‘আ দিনে পাঠ করে সন্ধ্যার আগে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতীদের অন্তর্গত হবে। আর রাতে পাঠ করে সকাল হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতীদের অন্তর্গত হবে।[63]
৩০। ঋণ পরিশোধ করার জন্য সাহায্য চেয়ে দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাযলিকা ‘আম্মান সিওয়া-কা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হালালের সাহায্যে হারাম হ’তে বাঁচাও এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা তুমি ব্যতীত অন্যের মুখাপেক্ষিতা হ’তে বাঁচাও’।
ফযীলত : পাহাড় পরিমাণ দেনার চাপ থাকলেও উক্ত দো‘আর বদৌলতে আল্লাহ তা পরিশোধ করার সামর্থ্য দিবেন বলে হাদীছে বর্ণিত হয়েছে।[64]
৩১। চোখ, কান, জিহবা, মন ও বীর্যের অপকারিতা হ’তে পরিত্রাণের দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি সাম‘ঈ ওয়া শাররি বাছারী ওয়া শাররি লিসা-নী ওয়া শাররি ক্বালবী ওয়া শাররি মানিইয়্যি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আমার কানের অপকারিতা, আমার চোখের অপকারিতা, আমার জিহবার অপকারিতা, আমার মনের অপকারিতা ও বীর্যের অপকারিতা হ’তে আশ্রয় চাই’।[65]
৩২। অভাব, স্বল্পতা ও অপমান হ’তে পরিত্রাণের দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল ফাক্বরি ওয়াল ক্বিল্লাতি ওয়াযযিল্লাতি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আন আযলিমা আও উযলামা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট অভাব, স্বল্পতা ও অপমান হ’তে আশ্রয় চাই। আরও আশ্রয় চাই অত্যাচার করা বা অত্যাচারিত হওয়া থেকে’।[66]
৩৩। শ্বেত রোগ, কুষ্ঠ রোগ, পাগলামি হ’তে আশ্রয় চেয়ে দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল বারাছি ওয়াল জুযা-মি ওয়াল জুনূনি ওয়া মিন সাইয়্যিইল আসক্বা-মি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে শ্বেত রোগ, কুষ্ঠ রোগ, পাগলামি ও খারাপ রোগ সমুদয় হ’তে আশ্রয় চাই’।[67]
৩৪। যুদ্ধে বের হয়ে যে দো‘আ পড়তে হয় :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আনতা ‘আযুদী ওয়া নাছীরী বিকা আহূলু ওয়া বিকা আছূলু ওয়া বিকা উক্বা-তিলু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার বাহুবল, তুমি আমার সাহায্যকারী, তোমারই সাহায্যে আমি শত্রুর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করি, তোমারই সাহায্যে আমি আগমণ চালাই এবং তোমারই সাহায্যে আমি যুদ্ধ করি’।[68]
৩৫। রাগ দমনের দো‘আ :
দু’জন লোক মহানবী (ছাঃ)-এর সামনে ঝগড়া-বিবাদ করছিল। এদের একজন রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারাবার উপগম হ’লে নবী করীম (ছাঃ) বললেন, আমি একটি বাক্য জানি যদি এ লোকটি সে বাক্য পাঠ করে তাহ’লে তার উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে যাবে। বাক্যটি হল এই-
উচ্চারণ: আ‘ঊযুবিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই বিতাড়িত শয়তান হ’তে’।
লোকটি সঙ্গে সঙ্গে বাক্যটি পাঠ করল এতে তার উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে গেল।[69]
৩৬। জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলায় দো‘আ :
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে লোক চিন্তা-ভাবনা, পেরেশানী কিংবা কোন জটিল বিষয়ের সম্মুখীন হবে তার পক্ষে নিম্নলিখিত বাক্যগুলি পড়া উচিত। তাতে সমস্ত জটিলতা সহজ হয়ে যাবে। বাক্যগুলি এরূপ-
উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ‘আযীমুল হালীম, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রাববুল ‘আরশিল ‘আযীম, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রাববুস সামা-ওয়া-তি ওয়া রাববুল আরযি রাববুল ‘আরশিল কারীম।
অর্থ: ‘সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, যিনি মহান আরশের প্রতিপালক। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, যিনি আসমান সমূহ ও যমীনের রব এবং মহান আরশের রব’।[70]
৩৭। বিপদের সময় যা পড়তে হয় :
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নী কুনতু মিনায যা-লিমীন।
অর্থ: ‘(হে আল্লাহ!) তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি মহা পবিত্র। আমি যালিমদের অন্তর্গত হয়ে গেছি’।[71]
নবী করীম (ছাঃ) বিপদ ও সংকটকালে বলতেন,
উচ্চারণ: ইয়া-হাইয়্যু ইয়া-ক্বাইয়্যূমু বিরাহমাতিকা আসতাগীছ।
অর্থ: ‘হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী! তোমার দয়ায় আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি’।[72]
কোন মুসলমানের উপর বিপদ আসলে বলতে হয়,
উচ্চারণ: ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রা-জি‘ঊন, আল্লা-হুম্মা আজিরনী ফী মুছীবাতী ওয়া আখলিফলী খাইরাম মিন্হা।
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমার এই বিপদে আমাকে প্রতিফল দাও এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম বিনিময় দান কর’।[73]
মুমিনের বৈশিষ্ট্য হ’ল, হঠাৎ বালা-মুছীবতের সম্মুখীন হ’লে ধৈর্য সহকারে উক্ত দো‘আ করা।
আবুবকর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, বিপদগ্রস্তের দো‘আ হচ্ছে-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা রাহমাতাকা আরজূ ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা ‘আইনিওঁ ওয়া আছলিহলী শা-নী কুল্লাহূ লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার দয়া কামনা করি। তুমি আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও আমার নিজের হাতে ছেড়ে দিও না। বরং তুমি স্বয়ং আমার সমস্ত ব্যাপার ঠিক করে দাও। তুমি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই’।[74]
৩৮। বিপদগ্রস্ত লোককে দেখে দো‘আ :
উচ্চারণ: আল-হামদু লিল্লা-হিল্লাযী ‘আ-ফা-নী মিম্মাব্তালা-কা বিহী ওয়া ফাযযালানী ‘আলা কাছীরিম্ মিম্মান খালাক্বা তাফযীলান্।
অর্থ: আল্লাহর শোকর, যিনি তোমাকে যাতে পতিত করেছেন তা হ’তে আমাকে নিরাপদে রেখেছেন এবং আমাকে তাঁর সৃষ্টির অনেক জিনিস অপেক্ষা অধিক মর্যাদা দান করেছেন’।[75]
ফযীলত : ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) ও আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন বিপদগ্রস্তকে দেখে উক্ত দো‘আ পাঠ করবে, তার প্রতি ঐ বিপদ কখনও পৌঁছাবে না, সে যেখানেই থাকুক না কেন’।[76]
৩৯। শত্রুর শত্রুতা থেকে বাঁচার জন্য দো‘আ :
আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন কোন দল সম্পর্কে ভয় করতেন তখন বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্না নাজ‘আলুকা ফী নুহূরিহিম ওয়া না‘ঊযুবিকা মিন শুরূরিহিম।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তোমাকে তাদের সামনে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছি এবং তাদের অনিষ্টতা থেকে বাঁচার জন্য তোমার আশ্রয় চাচ্ছি’।[77]
৪০। ভাল ব্যবহার করলে তার জন্য দো‘আ :
উচ্চারণ: জাঝা-কাল্লা-হু খাইরান
অর্থ: ‘আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন’।[78]
৪১। আকাশে মেঘ হ’লে করণীয় :
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) আকাশে মেঘ দেখলে এই দো‘আ পড়তেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন শাররি মা ফীহি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! এতে যা মন্দ রয়েছে তা হতে আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।
এতে যদি আল্লাহ মেঘ পরিস্কার করে দিতেন, তিনি আল্লাহর শোকর করতেন। আর বৃষ্টি বর্ষণ আরম্ভ হ’লে বলতেন- ‘ আল্লা-হুম্মা সাক্বইয়ান না-ফি‘আন’ । অর্থ: ‘হে আল্লাহ! উপকারী পানি দান কর’।[79]
৪২। ঝড়-তুফানের সময় পঠিতব্য দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মাফী হা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহী ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা ফীহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আগত ঝড়ের সাথে যে কল্যাণ এর মধ্যে যে কল্যাণ এবং যে কল্যাণ নিয়ে উক্ত ঝড় প্রেরিত তার সবগুলোই আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। আর আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি তার অকল্যাণ হ’তে, তার মধ্যে নিহিত অকল্যাণ হ’তে এবং যে অকল্যাণ নিয়ে প্রেরিত হয়েছে তা হ’তে।[80]
৪৩। বৃষ্টি চেয়ে দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আগিছনা, আল্লা-হুম্মা আগিছনা, আল্লা-হুম্মা আগিছ না।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দাও। হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দাও। হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দাও’।[81]
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাসক্বিনা আল্লা-হুম্মাসক্বিনা, আল্লা-হুম্মাসক্বিনা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! বৃষ্টি দাও, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দাও, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দাও’।[82]
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাসক্বিনা গাইছাম মুগীছাম মারীআন মারী‘আন না-ফি‘আন গাইরা যা-ররিন ‘আ-জিলান গাইরা আ-জিলিন।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে এমন সুপেয় পানি দ্বারা পরিতৃপ্ত, কর যা ফসল উৎপাদনে খুবই সহায়ক, অতি কল্যাণকর, কোন ক্ষতিকারক নয়, সহসা আগমনকারী, বিলম্বকারী নয়’।[83]
৪৪। বৃষ্টি বর্ষণ হ’তে দেখলে বলতে হয় :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ছাইয়িবান্ না-ফি‘আন্
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! মুষলধারায় কল্যাণকর বৃষ্টি দাও’।[84]
৪৫। বৃষ্টি বন্ধের দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা হাওয়া-লাইনা ওয়া লা ‘আলাইনা, আল্লা-হুম্মা ‘আলাল আকা-মি ওয়াল্ জিবা-লি ওয়াল্ উজা-মি ওয়ায্ যিরা-বি ওয়াল্ আওদিইয়াতি ওয়া মানা-বিতিশ্ শাজারি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের আশে-পাশে বৃষ্টি বর্ষণ কর, আমাদের উপরে করিও না। হে আল্লাহ! টিলা, পাহাড়, উচ্চভূমি, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনাঞ্চলে বর্ষণ কর’।[85]
৪৬। কুরবানী করার দো‘আ :
উচ্চারণ: বিস্মিল্লা-হি ওয়াল্লা-হু আকবার।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নামে যবেহ করছি, তিনি মহান’।[86]
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন্নী ওয়া মিন আহলি বাইতী।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নামে যবেহ করছি। হে আল্লাহ! তুমি কবুল কর আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে’।[87]
৪৭। চাঁদ দেখার দো‘আ :
ত্বালহা ইবনু ওবায়দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন তখন বলতেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আহিল্লাহূ ‘আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমা-নি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলা-মি রাববী ওয়া রাববুকাল্লা-হু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! এই নতুন চাঁদকে আমাদের হেফাযত, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের কল্যাণের সাথে উদয় কর। (হে চাঁদ) আমার প্রভু ও তোমার প্রভু এক আল্লাহ’।[88]
৪৮। নবজাত শিশুর তাহনীক ও দো‘আ করা :
‘তাহনীক’ শব্দের অর্থ- অভিজ্ঞ করা, সুদক্ষ করা। কোন তাক্বওয়াশীল ব্যক্তি খেজুর চিবিয়ে কিংবা মধু বা মিষ্টি জাতীয় কোন বস্ত্ততে স্বীয় লালা মিশ্রিত করে নবজাত শিশুর মুখে দেওয়াকে ‘তাহনীক’ বলে।
আসমা বিনতু আবুবকর (রাঃ)-এর সন্তান জন্মগ্রহণ করার পর তাকে এনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কোলে তুলে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একটি খেজুর আনতে বললেন এবং তিনি তা চিবিয়ে ছেলের মুখে তুলে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দো‘আ করলেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বা-রিক লাহুম ফীমা রাঝাক্বতাহুম।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তাকে সর্ববিষয়ে বরকত দান কর এবং যে রূযী দিয়েছ তাতেও বরকত দান কর’।[89]
৪৯। হাঁচি দিয়ে ও শুনে যে দো‘আ পড়তে হয় :
হাঁচি দিয়ে বলতে হয় ‘ আল- হামদু লিল্লা-হ’ ; অর্থ ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর’। শ্রোতা বলবে ‘ ইয়ারহামু কাল্লা-হু’ অর্থ: ‘আল্লাহ তোমার উপর রহমত বর্ষণ করুক’।
হাঁচি দাতা পুনরায় বলবে ‘ ইয়াহদীকুমুল্লা-হু ওয়া ইউছ্লিহু বা-লাকুম্’ । অর্থ: ‘আল্লাহ তোমাকে (বা তোমাদেরকে) হেদায়াত করুন এবং তোমাকে (বা তোমাদেরকে) সংশোধন করুন’।
অমুসলিমদের হাঁচির জবাবেও ‘ ইয়াহদীকুমুল্লা-হু ওয়া ইউছ্লিহু বা-লাকুম্’ পড়বে।
৫০। হাটে-বাজারে প্রবেশ করার সময় দো‘আ :
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইউহ্য়ী ওয়া ইউমীতু ওয়া হুয়া হাইয়্যুল লা-ইয়ামূতু বিইয়াদিহিল খাইরু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।
অর্থ: ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দান করেন। তিনি চিরঞ্জীব, কখনও মৃত্যুবরণ করবেন না। তাঁর হাতেই কল্যাণ এবং তিনি সমস্ত বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান’।[90]
নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উক্ত দো‘আ পড়ে বাজারে প্রবেশ করবে, আল্লাহ তার জন্য দশ লক্ষ পুণ্য লিখবেন, দশ লক্ষ পাপ মুছে দিবেন, দশ লক্ষ মর্যাদা বাড়াবেন, বেহেশতে তার জন্য একটি ঘর প্রস্ত্তত করবেন’।[91]
৫১। রোগীকে দেখতে যাওয়া এবং তার জন্য দো‘আ :
রোগী দেখতে যাওয়ার ফযীলত: ছাওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন মুসলমান যখন কোন রোগী দেখতে যেতে থাকে, তখন সে জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে (অথবা জান্নাতের পথে চলতে থাকে), যতক্ষণ না সে প্রত্যাবর্তন করে’।[92]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমাদের মধ্যে কারো যখন অসুখ হ’ত তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর ডান হাত অসুস্থ ব্যক্তির গায়ে বুলাতেন এবং বলতেন,
উচ্চারণ: আযহিবিল বা’সা রাববাননা-সি ওয়াশফি আনতাশ শা-ফী লা শিফা-আ ইল্লা শিফা-উকা শিফা-আল লা-ইউগা-দিরু সাক্বামা।
অর্থ: ‘হে মানুষের প্রতিপালক! তুমি এ রোগ দূর কর, তাকে আরোগ্য দান কর, তুমিই আরোগ্যদানকারী। তোমার আরোগ্য ব্যতীত কোন আরোগ্য নেই, এমন আরোগ্য, যা ধোকা দেয় না কোন রোগীকে’।[93]
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) কোন রোগীকে দেখতে গেলে বলতেন-
উচ্চারণ: লা-বা’সা ত্বহূরুন ইনশা-আল্লা-হ।
অর্থ: ‘ভয় নেই, আল্লাহর মেহেরবানীতে আরোগ্য লাভ করবে ইনশাআল্লাহ’।[94]
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, কেউ কোন রোগীকে দেখতে গেলে তার সামনে সে নিম্নের দো‘আটি সাত বার পড়বে,
উচ্চারণ: আসআলুল্লা-হাল ‘আযীমা রাববাল ‘আরশিল ‘আযীমি আইয়্যাশফিয়াকা।
অর্থ: ‘আমি মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি, যিনি মহান আরশের অধিকারী, তিনি যেন তোমাকে আরোগ্য দান করেন’।[95]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ তার কোন অঙ্গে বেদনা অনুভব করত বা কোথাও ফোড়া, বাঘী ইত্যাদি দেখা দিত, তখন নবী করীম (ছাঃ) তার উপর নিজের অঙ্গুলি বুলাতে বুলাতে বলতেন,
উচ্চারণ: বিসমিল্লা-হি তুরবাতু আরযিনা বিরীক্বাতি বা‘যিনা-লিইউশফা সাক্বীমুনা বিইযনি রাবিবনা।
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে, আমাদের যমীনের মাটি আমাদের কারো থুথুর সাথে মিশিয়ে আমাদের রোগীকে ভাল করবে, আমাদের প্রভুর নির্দেশে’।[96]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন অসুস্থ হ’তেন ‘মু‘আওবিযাতান’ দ্বারা নিজের শরীরের উপর ফুঁ দিতেন এবং নিজের হাত দ্বারা শরীর মুছে ফেলতেন (যেন রোগ দূর করা হচ্ছে)।[97]
‘মু‘আওবিযাতান’ হল (১) কুরআনের শেষ দুই সূরা- সূরা ফালাক্ব ও নাস অথবা (২) সূরা কাফেরূন ও এখলাছ অথবা (৩) সে সকল আয়াত, যাতে আল্লাহর স্মরণ করা হয়েছে।
ওছমান ইবনু আবুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, একবার তিনি তার শরীরে বেদনার কথা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জানালেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, তুমি তোমার শরীরে যেখানে বেদনা অনুভূত হচ্ছে সেখানে হাত রেখে তিনবার ‘বিসমিল্লাহ’ আর সাত বার বল-
উচ্চারণ: আ‘ঊযু বি‘ইঝঝাতিল্লা-হি ওয়া ক্বুদরাতি-হী মিন্ শাররি মা-আজিদু ওয়া উহা-যিরু।
অর্থ: ‘আমি আল্লাহর প্রতাপ ও তাঁর ক্ষমতার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি যা আমি অনুভব করছি ও আশংকা করছি তার মন্দ হ’তে’। ওছমান (রাঃ) বলেন, আমি তা করলাম, ফলে আল্লাহ আমার শরীরে যা ছিল তা দূর করে দিলেন।[98]
৫২। মৃত্যু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাময় ব্যক্তির দো‘আ :
নবী করীম (ছাঃ) মৃত্যুর আগে নিম্নের দো‘আ বেশী বেশী পড়ছিলেন-
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাগফিরলী ওয়ার হামনী ওয়া আলহিক্বনী বিররাফীক্বিল আ‘লা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর এবং আমাকে মহান বন্ধুর সাথে মিলিয়ে দাও’।[99]
৫৩। মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট যা বলতে হয় :
আবু সাঈদ খুদরী ও আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের মুমূর্ষু ব্যক্তিদেরকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলে দিবে’।[100]
মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট স্পষ্ট করে ও ধীরে ধীরে উক্ত কালিমাটি শুনাতে হবে, যাতে সে পড়তে পারে।
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যার শেষ বাক্য হবে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ সে জান্নাতে যাবে।[101]
মৃত ব্যক্তির চোখ বন্ধ করার সময় যে দো‘আ পড়তে হয়:
উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আবু সালামার নিকট পৌঁছলেন তখন তাঁর চক্ষু-খোলা ছিল। তিনি তার চক্ষু বন্ধ করে বললেন, রূহ যখন কবয করা হয় তখন চক্ষু তার অনুসরণ করে। একথা শুনে আবু সালামার পরিবারের কিছু লোক চিৎকার করে কেঁদে উঠলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, নিজেদের জন্য মঙ্গল কামনা ছাড়া অযথা কিছু করো না। কেননা তোমরা যা বলবে, তার উপর ফেরেশতাগণ আমীন বলবেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাগফিরলি আবী সালামাতা ওয়ারফা‘ দারাজাতাহূ ফিল মাহদিইয়্যিনা ওয়াখলুফহু ফী ‘আক্বিবিহী ফিল গা-বিরীন, ওয়াগফিরলানা ওয়া লাহূ ইয়া-রাববাল ‘আ-লামীনা ওয়াফসাহ্ লাহূ ফী ক্বাবরিহী ওয়া নাওবির লাহূ ফীহ্।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আবু সালামাকে মাফ করে দাও, হেদায়াত প্রাপ্তদের মধ্যে তাকে উচ্চ মর্যাদা দান কর এবং তার পিছনে যারা রয়ে গেল তাদের মধ্যে তুমিই তার প্রতিনিধি হও। ইয়া রাববাল আলামীন! তুমি আমাদেরকে ও তাকে ক্ষমা কর, তার কবরকে প্রশস্ত করে দাও এবং তাতে তার জন্য আলোর ব্যবস্থা কর’।[102]
বি:দ্র: দো‘আতে আবু সালমার নাম আছে। আবু সালমার নাম বাদ দিয়ে যার জন্য দো‘আ পাঠ করা হবে তার নাম উক্ত জায়গায় সংযুক্ত করা যাবে।
৫৪। কোন নতুন জায়গায় গিয়ে দো‘আ :
উচ্চারণ: আ‘ঊযুবিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা-খালাক্বা।
অর্থ: ‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমা দ্বারা তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে মুক্তি চাচ্ছি’।[103]
খাওলা বিনতে হাকীম (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন স্থানে অবতরণ করে উক্ত দো‘আ পাঠ করবে তাকে কোন জিনিস ক্ষতি করতে পারবে না, সেই স্থান হ’তে প্রস্থান করা পর্যন্ত।[104]
৫৫। ‘আনন্দের’ সংবাদ শুনে করণীয় :
নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে আনন্দের সংবাদ আসলে তিনি আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় স্বরূপ সিজদায় পড়ে যেতেন।[105]
আশ্চর্যজনক অবস্থায় ‘সুবহানাল্লাহ’ ও আনন্দের সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হয়।[106]
৫৬। কেউ প্রশংসা করলে বলতে হয় :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা লা-তুআ-খিয্নী বিমা ইয়াকূলূনা, ওয়াগফিরলী মা-লা ইয়া‘লামূনা ওয়াজ‘আলনী খাইরাম মিম্মা-ইয়াযুননূনা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তারা যা বলছে তার জন্য আমাকে পাকড়াও কর না, আমাকে ক্ষমা কর, যা তারা জানে না। আর আমাকে তাদের ধারণার চেয়েও ভাল করে দাও।[107]
৫৭। শিরক থেকে বাঁচার দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা আন্ উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ‘লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আ‘লামু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। আর অজানা অবস্থায় শিরক হয়ে গেলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’।[108]
৫৮। কোন ব্যক্তি দান করলে তার জন্য দো‘আ :
উচ্চারণ: বা-রাকাল্লা-হু লাকা ফী আহলিকা ওয়া মা-লিকা।
অর্থ: ‘আল্লাহ! তোমার সম্পদ ও পরিবারবর্গে বরকত দান করুন’।[109]
আব্দুল্লাহ ইবনু আবু আওফা (রাঃ) বলেন, যখন কোন ব্যক্তি নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট ছাদাক্বাহ নিয়ে আসত, তখন তিনি বলতেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ছাল্লি ‘আলাইহি।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি তার প্রতি দয়া কর’।[110]
৫৯। বরকত সহ সম্পদ বৃদ্ধির দো‘আ :
উম্মে সুলাইম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আনাস আপনার খাদেম, আপনি আল্লাহর নিকট তার জন্য দো‘আ করুন। নবী করীম (ছাঃ) দো‘আ করলেন,
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আকছির মা-লাহু ওয়া ওয়ালাদাহু ওয়া বা-রিক লাহু ফীমা আ‘ত্বাইতাহু।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি তার সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দিন, আর আপনি তাকে যা কিছু দিয়েছেন তাতে বরকত দান করুন’।[111]
৬০। ইফতারের দো‘আ :
ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন,
উচ্চারণ: যাহাবায যামা-উ ওয়াব তাল্লাতিল ‘উরূক্বু, ওয়া ছাবাতাল আজরু ইনশা-আল্লা-হ।
অর্থ: ‘তৃষ্ণা দূর হ’ল, শিরা-উপশিরা সিক্ত হ’ল এবং সওয়াব নির্ধারিত হ’ল ইনশাআল্লাহ।[112]
৬১। লায়লাতুল ক্বদরের দো‘আ :
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউউন তহিববুল ‘আফ্ ওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে ভালবাস, অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর’।[113]
৬২। পশুর পিঠে আরোহনের দো‘আ :
একদা আলী (রাঃ)-এর নিকট একটি আরোহনের পশু আনা হ’লে তিনি তাতে পা রাখার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বললেন। পিঠে আরোহনের পর ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বললেন। অতঃপর বললেন,
উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লাযী সাখখারা লানা হা-যা ওয়া মা-কুন্না লাহূ মুক্বরিনীন। ওয়া ইন্না- ইলা রাবিবনা লামুনক্বালিবূন।
অর্থ: ‘পবিত্র তিনি, যিনি (আল্লাহ) একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব’। অতঃপর তিনবার ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ এবং তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন।
এরপর বললেন,
উচ্চারণ: সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফসী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: ‘আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অত্যাচার করেছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার আর কেউ নেই’।[114]
উল্লেখ্য: উক্ত দো‘আ যান্ত্রিক স্থল ও আকাশ যানবাহনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
৬৩। সফরের দো‘আ :
ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সফরে বের হবার সময় যখন উটের পিঠে আরোহন করতেন তখন তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। অতঃপর বলতেন,
উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লাযী সাখখারা লানা হা-যা ওয়া মা-কুন্না লাহূ মুক্বরিনীন। ওয়া ইন্না ইলা রাবিবনা লামুন ক্বালিবূন। আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফী সাফারিনা হা-যাল বিররা ওয়াত্ তাক্বওয়া ওয়া মিনাল ‘আমালি মা-তারযা। আল্লা-হুম্মা হাওবিন ‘আলাইনা সাফারানা হা-যা ওয়া আত্ববি লানা বু‘দাহূ। আল্লা-হুম্মা আনতাছছাহিবু ফিসসাফারি ওয়ালখালীফাতু ফিলআহলি ওয়ালমালি। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ওয়া‘ছা-ইস সাফারি ওয়া কা-বাতিল মানযারি ওয়া সূইল মুনক্বালাবি ফিল মা-লি ওয়াল আহলি।
অর্থ: পবিত্র তিনি, যিনি (আল্লাহ) এদেরকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন এবং আমরা এদেরকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমরা আমাদের এই সফরে তোমার নিকট মঙ্গল ও পরহেযগারী কামনা করছি। আর এমন আমল কামনা করছি, যা তোমার সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হবে। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য এই সফরকে সহজসাধ্য করে দাও এবং তার দূরত্বকে কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ! তুমিই এই সফরে আমাদের সাথী এবং পরিবার-পরিজন ও সম্পদের তুমিই একমাত্র রক্ষক। হে আল্লাহ! তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের ক্লান্তি, বেদনাদায়ক দৃশ্য এবং প্রত্যাবর্তনের পর সম্পদ ও পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি ও অশুভ পরিণতি হতে’।
আর যখন নবী করীম (ছাঃ) সফর হ’তে ফিরে আসতেন তখন নিম্নের অংশটুকু বৃদ্ধি করে বলতেন,
উচ্চারণ: আ-ইবূনা, তা-ইবূনা, ‘আ-বিদূনা লিরাবিবনা হা-মিদূন।
অর্থ: ‘আমরা প্রত্যাবর্তন করলাম তওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমাদের প্রভুর প্রশংসাকারী রূপে’।[115]
৬৪। ঈদের দিনে তাকবীর পাঠ :
উচ্চারণ: আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার ওয়া লিল্লা-হিল হামদ্।
অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য (ইবনু আবী শায়বা)।
৬৫। প্রতিদিনের তাসবীহ-তাহলীল :
আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে বেশী বেশী করে স্মরণ কর’ (আহযাব ৪১)।
সূরা আ‘রাফের ৫৫ ও ২০৫নং আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করার পদ্ধতি জানা যায়। তাঁকে স্মরণ করতে হবে আপন মনে, কাকুতি-মিনতি করে, সংগোপনে, নীরবে, সকালে ও সন্ধ্যায় (সর্বক্ষণ)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় বাক্য ৪টি। আর এ বাক্য ৪টি পাঠ করা তাঁর কাছে সমগ্র পৃথিবী অপেক্ষা প্রিয়তর। বাক্য ৪টি হল- (১) সুবহা-নাল্লা-হ (২) আল্হামদু লিল্লা-হ (৩) লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ (৪) আল্লা-হু আকবার।[116]
নবী করীম (ছাঃ) প্রত্যেক ছালাতের পর ১০ বার করে ‘সুবহা-নাল্লা-হ’, ‘আল-হামদুলিল্লা-হ’, ‘আল্লা-হু আকবার’ পড়তে বলেছেন।[117]
নবী করীম (ছাঃ) প্রত্যেক ছালাতের পর ও শয্যা গ্রহণ কালে ৩৩ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’, ৩৩ বার ‘আল-হামদুলিল্লা-হ’, ৩৪ বার ‘আল্লা-হু আকবার’ পড়তে বলেছেন।[118]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, শ্রেষ্ঠ যিকর হল- ‘লা-ইলা-হা ইল্লল্লা-হ’, আর শ্রেষ্ঠ দো‘আ হল- ‘আলহামদু লিল্লা-হ’।[119]
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যার শেষ বাক্য হবে ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ সে জান্নাতে যাবে’।[120]
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যহ একশ’ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ বলবে তার জন্য এক হাযার নেকী লেখা হবে এবং এক হাযার অপরাধ ক্ষমা করা হবে’।[121]
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী’ বলবে তার অপরাধ সমূহ মাফ করে দেয়া হবে। তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও।[122]
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি বলবে ‘সুবহা-নাল্লা- হিল ‘আযীম ওয়া বিহামদিহী’ তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হবে।[123]
রাসূল (ছাঃ) বলেন, জান্নাতের ধনাগারের একটি কালেমা হল- ‘লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’।[124]
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যহ ১০০ বার বলবে, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহূ লা-শারীকালাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর’ সে ১০জন দাস মুক্ত করার সমান ছওয়াব পাবে, তার জন্য ১০০টি পুণ্য লেখা হবে, ১০০টি অপরাধ ক্ষমা করা হবে, ঐ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান হ’তে নিরাপদ থাকবে এবং সে সবচেয়ে বেশী মর্যাদার অধিকারী হবে।[125]
ইউসিরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে বললেন, তোমাদের জন্য তাসবীহ, তাহলীল, তাকদীস পাঠ করা যরূরী। তোমরা আঙ্গুলের মাধ্যমে তাসবীহ পাঠ কর। নিশ্চয়ই আঙ্গুলকে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং আঙ্গুল কথা বলবে।[126] আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে দক্ষিণ হস্ত দিয়ে তাসবীহ গণনা করতে দেখেছি।[127]
৬৬। বৈঠকে যে দো‘আ পড়তে হয় :
একই বৈঠকে নবী করীম (ছাঃ) একশত বার নিম্নের দো‘আটি পড়তেন,
উচ্চারণ: রাব্বিগ ফিরলী ওয়াতুব ‘আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত্ তাউওয়াবুল গাফূর।
অর্থ: ‘প্রভু হে! তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার তওবা কবুল কর। কেননা তুমি তওবা কবুলকারী ক্ষমাশীল’।[128]
৬৭। বৈঠক শেষের দো‘আ :
আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন বৈঠকে বসতেন বা কুরআন তেলাওয়াত করতেন অথবা কোন ছালাত আদায় করতেন এসব কিছুর সমাপ্তি ঘোষণা করতেন এই বলে,
উচ্চারণ: সুব্হা-নাকা আল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আন লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র এবং তোমার প্রশংসা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করছি’।[129]
[1] বুখারী (ই.ফা) হা/৫৭৬৮।
[2] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২২৭৪।
[3] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২২৭৪।
[4] বুখারী, মিশকাত হা/২২৭২।
[5] বুখারী, মিশকাত হা/২০২১।
[6] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২০২৯।
[7] তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২২৮৯।
[8] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২০২৩।
[9] মুসলিম, মিশকাত হা/২২৭৭।
[10] আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩৬৩।
[11] ঐ।
[12] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৪০৮-৯।
[13] বুখারী, মিশকাত হা/২২৭২।
[14] বুখারী, মিশকাত হা/৩১০।
[15] তিরমিযী, মিশকাত হা/৩৩২।
[16] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৯৮০।
[17] তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০৯৮।
[18] তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০২০।
[19] আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৪১৪৯।
[20] ঐ।
[21] আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০২৪।
[22] বুখারী, মিশকাত হা/৪০১৭।
[23] তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০৯৮।
[24] মুসলিম, মিশকাত হা/২৩১৫।
[25] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪১০৯।
[26] ঐ।
[27] তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৩০।
[28] আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৩২৯।
[29] আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৩১।
[30] আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩২২, ২৩২৪।
[31] তিরমিযী সনদ ছহীহ, হিছনুল মুসলিম, পৃঃ ১৩।
[32] আহমাদ, মিশকাত হা/৫০৯৯, হাদীছ ছহীহ।
[33] আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৩২।
[34] আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, সনদ হাসান, মিশকাত হা/২৪৪৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৩৩৩।
[35] ঐ।
[36] আদাবুয যিফাফ, পৃঃ ৯৬, বঙ্গানুবাদ পৃঃ ২৭।
[37] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০৪।
[38] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০৪।
[39] তিরমিযী, আবুদাঊদ, সনদ ছহীহ, ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৩৬৩২; মিশকাত হা/২২৭৯।
[40] তিরমিযী, আবুদাঊদ, সনদ ছহীহ, ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৩৬৩২; মিশকাত হা/২২৭৯।
[41] আবুদাঊদ, তিরমিযী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩৯২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২২৮৪।
[42] আবুদাঊদ, তিরমিযী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩৯২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২২৮৪।
[43] ছহীহ তিরমিযী হা/২৮৩১, মিশকাত হা/২২৪৪ সনদ ছহীহ।
[44] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০৩, বঙ্গানুবাদ- ২২১২।
[45] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১৮৯।
[46] আবুদাঊদ, সনদ হাসান, মিশকাত হা/২৩০১।
[47] আবুদাঊদ, সনদ হাসান, মিশকাত হা/২৩০১।
[48] আবুদাঊদ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২২৮৬।
[49] মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৪৮।
[50] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩৪৫।
[51] তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২২৮০।
[52] আহমাদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/২৩৮৪।
[53] মুসলিম, মিশকাত হা/২৩১১।
[54] আবুদাঊদ।
[55] মুসলিম, মিশকাত হা/৭১।
[56] তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, সনদ হাসান, মিশকাত হা/১০২, বাংলা মিশকাত হা/৯৫।
[57] বুখারী, মিশকাত হা/১১৪৫।
[58] বুখারী, মিশকাত হা/১১৪৫।
[59] আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৮৮৮।
[60] আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৮৮৮।
[61] বুখারী, মিশকাত হা/৯০২।
[62] বুখারী, মিশকাত হা/২২২৭।
[63] বুখারী, মিশকাত হা/২২২৭।
[64] ছহীহ তিরমিযী হা/২৮২২; মিশকাত হা/২৩৩৬ সনদ হাসান।
[65] ছহীহ আবুদাঊদ হা/১৫৫১; মিশকাত হা/২৩৫৮ সনদ ছহীহ।
[66] আবুদাঊদ, ছহীহ নাসাঈ হা/১৩৪৭; মিশকাত হা/২৩৫৩।
[67] ছহীহ আবূদাঊদ হা/১৫৫৪; মিশকাত হা/২৩৫৬ সনদ ছহীহ।
[68] তিরমিযী, সনদ ছহীহ, ছহীহ আবূদাঊদ হা/২৬৩২; মিশকাত হা/২৩২৭।
[69] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০৬।
[70] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০৫।
[71] আম্বিয়া ৮৭।
[72] তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩৪১।
[73] মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৩০।
[74] ছহীহ আবূদাঊদ হা/৫০৯০; মিশকাত হা/২৩৩৪ সনদ হাসান।
[75] তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৩১৭।
[76] তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৩১৭।
[77] আহমাদ, ছহীহ আবূদাঊদ হা/১৫৩৭; মিশকাত হা/২৩২৮ সনদ ছহীহ।
[78] তিরমিযী।
[79] নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, ছহীহ আবূদাঊদ হা/৫০৯০; মিশকাত হা/১৪৩৪ সনদ ছহীহ।
[80] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪২৭।
[81] বুখারী হা/৯৫৯।
[82] বুখারী হা/৯৫৮।
[83] আবুদাউদ, মিশকাত হা/১৪২১।
[84] বুখারী হা/৯৭৫, মিশকাত হা/১৪১৪।
[85] বুখারী হা/৯৫৮।
[86] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৬৯।
[87] ড: মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, মাসায়েলে কুরবানী।
[88] তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩১৬।
[89] বুখারী হা/৪৯৬০; মিশকাত হা/৩৯৭২।
[90] তিরমিযী, সনদ হাসান, ইবনু মাজাহ হা/২২৩৫; মিশকাত হা/২৩১৮।
[91] তিরমিযী, সনদ হাসান, ইবনু মাজাহ হা/২২৩৫; মিশকাত হা/২৩১৮।
[92] মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৪১।
[93] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪৪৪।
[94] বুখারী, মিশকাত হা/১৪৪৩।
[95] আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৪৬৭।
[96] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪৪৫।
[97] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪৪৬।
[98] মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৪৭।
[99] বুখারী, মুসলিম।
[100] মুসলিম, মিশকাত হা/১৫২৮।
[101] আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৫৩৩।
[102] মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৩১।
[103] মুসলিম, মিশকাত হা/২৩১০।
[104] মুসলিম, মিশকাত হা/২৩১০।
[105] আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৪০৮।
[106] বুখারী (ই.ফা) হা/৫৬৭২।
[107] বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ, হিসনুল মুসলিম।
[108] আহমাদ, হিসনুল মুসলিম।
[109] বুখারী
[110] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৬৮৫।
[111] বুখারী হা/৫৮২৫।
[112] আবূদাঊদ, মিশকাত হা/১৮৯৬।
[113] আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৯৯০।
[114] আহমাদ, তিরমিযী, আবূদাঊদ, মিশকাত হা/২৩২১।
[115] মুসলিম, মিশকাত হা/২৩০৮।
[116] মুসলিম, মিশকাত হা/২১৮৬-৮৭।
[117] বুখারী (ই.ফা) হা/৫৭৭৭।
[118] মুসলিম, মিশকাত হা/৯০৪, ২২৭৭।
[119] তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২১৯৮।
[120] আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৫৩৩।
[121] মুসলিম, মিশকাত হা/২১৯১।
[122] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১৮৮।
[123] তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৯৬।
[124] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১৯৫।
[125] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১৯৪।
[126] তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২২০৮।
[127] আবুদাঊদ, হিসনুল মুসলিম, ২৯৯ পৃঃ।
[128] আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২২৪৩।
[129] আহমাদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৩৩৭।