সংগ্রহঃ আসাদ রনি (মোঃ আসাদুজ্জামান)
১। বুযুর্গ লোকদের কবরের উপর গৃহ ও গম্বুজ তৈরি করা,
২। দরগাহ বা কাবরের পাশে গরু ছাগল ইত্যাদি যবেহ করা ও খাবার বিতরণ করা,
৩। মৃত ব্যক্তির ইছালে ছাওয়াব ও বার্ষিকীর আয়োজন করা,
৪। এক মিনিট নিরবতা পালন করা,
৫। মাসজিদে হারাম ও মসজিদে নববী থেকে, অনুরূপভাবে কাবরস্থান থেকে পশ্চাত দিক হয়ে বের হয়ে আসা,
৬। মৃত্যুর পর কবর পাহারা দেয়া, কবরে মশারি দেয়া,
৭। রাসূল (সা.)-এর নাম শুনলে চোখে বৃদ্ধাঙ্গুল বুলানো,
৮। মসজিদ বা মাজার দেখলে হিন্দুদের মত হাত মুখে ও কপালে লাগানো,
৯। একামতের সময় আশহাদু আন্না মুহাম্মাদর রাসূল্ল্লুাহ বলা পর্যন্ত বসে থাকা,
১০। কবরে ধূপ, আগরবাতি ও মোমবাতি জ্বালানো,
১১। ফরয নামাযের পর নিয়মিত সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা,
১২। সম্মিলিতভাবে সমস্বরে যিকির করা,
১৩। আযানের আগে বা পরে জোরে জোরে রাসূল (সা.) এর প্রতি সালাত ও সালাম প্রেরণ করা,
১৪। জানাযার নামায শেষে দাফনের পূর্বে মুনাজাত করা এবং মৃত ব্যক্তিটি কেমন ছিল প্রশ্ন করা,
১৫। নামায ও রোযার নিয়ত মুখে শব্দ করে উচ্চারণ করা,
১৬। হাফেয আলেমদের দাওয়াত দিয়ে কুরআন খতম করা,
১৭। কোরআন ও হাদীসে প্রমাণ নেই এ ধরনের যে কোনো যিকির ও খতম,
১৮। কোন বুযুর্গের মাযারে মেলা মিলানো,
১৯। ওরস করা,
২০ কাওয়ালী জন্মবার্ষিকী ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা,
২১। মৃতের কুলখানী করা। অর্থাৎ- চতুর্থ দিনেই ঈছালে সাওয়াব কর,
২২। মৃতের চেহলাম বা চল্লিশা কর,
২৩। কবর বা মাযারের উপর চাদর, শামিয়ানা, মিঠাই ইত্যাদি নযরানা দেয়া,
২৪। কবরের উপর ফুল দেয়,
২৫। কবর পাকা করা,
২৬। কবরের উপর গম্বুজ বানানো,
২৭। কবরের দুই প্রান্তে কাঁচা ডাল লাগানোকে স্থায়ী নিয়মে পরিণত করা,
২৮। প্রচলিত মিলাদ অনুষ্ঠান,
২৯। মীলাদ অনুষ্ঠানে কেয়াম করা,
৩০। যানাজার নামাযের পর আবার হাত উঠিয়ে দোয়া করা,
৩১। জানাযা নামাযের পর জোর আওয়াজে কালেমা পড়তে পড়তে জানাযা বহন করে নিয়ে যাওয়া,
৩২। দাফনের পর কবরের কাছে আযান দেয়া,
৩৩। আযান, ইকামতের মধ্যে রাসুল সা. এর নাম এলে বৃদ্ধা আঙ্গুলে চুমু দিয়ে চোখে লাগানো,
৩৪। রমাযানের শেষ জুমুআর খুতবায় বিদায় জ্ঞাপন মূলক শব্দ (যমন আল-বিদা) ইত্যাদি যোগ করা। উল্লেখ্য, ‘জুমুআতুল বিদা’ বলে কোন ধারণা ইসলামে নেই,
৩৫। জানাযার উপর কালিমা ইত্যাদি লেখা বা ফুলের চাদর বিছানোইত্যাদি,
৩৬। সম্মান করার নামে কদমবুসি করা (পা ছুয়ে সালাম করা),
৩৭। নতুন দোকান, বাড়ি, অফিস বা গাড়ি উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কুরান খতম , মিলাদ মাহফিল বা খতমে গাউসিয়া পড়া।,
৩৮। ছেলে বা মেয়ের পরীক্ষা, বিদেশে যাত্রার প্রাক্কালে, বিপদ থেকে রক্ষা বা আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কোন আলেম বা মৌলভী দ্বারা কুরআন খতম করানো,
৩৯। হাফেজ দ্বারা খতমে সাবিনা পড়ানো,
৪০। রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশিত দুরুদ ছাড়া অন্য দুরুদ পড়া। যেমন—দুরুদে লাখি, দুরুদে তাজ, দুরুদে হাজারী, দুরুদে মুক্কাদাস, দুরুদে নারীয়া দুরুদে মাহী, দুরুদে মুজাদ্দেদিয়া, দুরুদে কাদেরিয়া, দুরুদে চিস্তিয়া, দুরুদে নকশ বন্দিয়া বা অন্য সকল দুরুদ যা ব্যক্তি বিশেষ কর্তৃক রচিত,
৪১। রাসুলের(সাঃ) এর উপস্থিতি মনে করে দাঁড়িয়ে দুরুদ পড়া,
৪২। ইসতিনজার ক্ষেত্রে ঢিলা বা টয়লেট পেপার দিয়ে পুরুষাঙ্গ হাতে ধরে এদিক ঐদিক হাটা হাটি কিংবা চল্লিশ কদম হাটা, মাটিতে জোরে জোরে পা মারা, এক উরু দিয়ে অন্য উরু তে চাপ দেয়া , যা ভদ্রতা, সভ্যতা , সুরুচি দ্বীনি মর্যাদা ও লজ্জার বিপরীত,
৪৩। আযানের পূর্বে সালাত ও সালাম পেশ করা,
৪৪। সালাত শুরু করার পূর্বের ‘ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়ালিল্লাযি’ এই দোয়া পাঠ করা,
৪৫। সালাতের শেষে ইমামে নেতৃত্বে মোনাজাত আবশ্যিক মনে করা,
৪৬। জুমআর খুতবার সময় ইমাম কারুকার্য সম্পন্ন ও লম্বা লাঠি ব্যবহার করা,
৪৭। কোন পীর অলীর মাজার জিয়ারত করা,
৪৮। রবিউসসানির ১১ তারিখে ফাতেহা ইয়াজদাহুম এর নামে বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী সাহেবের নামে ফাতেহা বা উরস করা,
৪৯। শবে বরাত পালন করা,
৫০। শবে বরাত ও শবে মেরাজের বিশেষ সালাত পড়া,
৫১। শবে বরাতের রাতে হালুয়া রুটি বানানো,
৫২। শবে বরাতের রাতে কবর যিয়ারত করা,
৫৩। শবে বরাতের রোজা রাখা,
৫৪। নারায়ে রিসালাত ও নারায়ে গাউসিয়া শ্লোগান দেয়া,
৫৫। হজ্জের উদ্দেশ্যে বের হয়ে প্রথমে বায়তুল্লাহ না গিয়ে সরাসরি মদীনা শরীফ জেয়ারত করা,
৫৬।তাসবীহের ছড়া দিয়ে তাসবীহ গননা করা বিদ’আত, আঙ্গুলের গিরা দ্বারা গননা করা সুন্নাত। কেননা আঙ্গুল সমূহ হাশরের ময়দানে সাক্ষ্য দেবে (আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসায়ি),
৫৭। কুরআন তিলাওয়াতের সময় কানে মুখে হাত দিয়ে চেহারা বিকৃত করে তেলাওয়াত ক্রয়া এবং তেলাওয়াত শেষে ‘সদাক্বাল্লাহুল আ’যীম’ বলা।,
৫৮। নামাজে মুখে নিয়ত পাঠ করা,
৫৯। ফরজ নামাজের আগে পরে দলবদ্ধ ভাবে জিকির করা,
৬০। উচ্চকণ্ঠে বা চিৎকার করে জিকির করা বা হালকায়ে জিকিরের অনুস্থান করা,
৬১। জানাজা নামাজ শেষে সম্মিলিত মোনাজাত করা,
৬২। রুহের মাঘফেরাতের উদ্দেশে ফাতেহা পাঠ করা,
৬৩। কবরের কাছে বা মাজারে কুরআন পাঠ করা,
৬৪। তথাকথিত পীর ব্যবসা বা পীরের মুরিদ হওয়া,
৬৫। প্রচলিত তাবলীগ এবং চিল্লা প্রথা,
৬৬। প্রচলিত বিশ্ব ইজতেমা,
৬৭। মৃত ব্যাক্তির কাযা বা ছুটে যাওয়া নামাজ সমুহের কাফফারা আদায় করা,
৬৮। খতম পড়িয়ে মৃতের রুহের উপর বখশানো,
৬৯। বিভিন্ন ধরণের খতম যেমন-খতমে ইউনুস, খতমে জালালী,
বিয়ের ক্ষেত্রে বিদ’আতঃ
১। মেয়ে দেখার ক্ষেত্রে বিদআত,
২। ওয়াকিল বাবা বানানো,
৩। কবুল বলার পর দাঁড়িয়ে সালাম করা,
৪। বিয়ের মোহারানা ক্ষেত্রে বিদআত,
৫। বিয়ের অনুষ্ঠানের বিদআত,
৬। বরের বাড়ীতে বিয়ের দিন মালামাল পাঠানো বা যৌতুক,
৭। বিয়ের দিন উপহার নেওয়া,
৮। ওয়ালিমা না করা,
৯। মেয়ে পক্ষের খরচ করা,
১০। বিয়ের আগে এংগ্যাজমেন্ট রিং পড়ানো,
১১। বিয়ের পর মেয়ে পক্ষের পক্ষ থেকে রমজানে ইফতার দেওয়া, মৌসুমী ফল পাঠানো, ঈদের সময় কাপড় চোপড় পাঠনো।
এলাকা ও অঞ্চল ভিত্তিক কালক্রমে নতুন নতুন উদ্ভাবিত হয়েছে তা সবই বিদ’আত ও নাজায়েয। যেমনঃ
১। মৃত ব্যক্তির জন্য মাঘফিরাত কামনার নামে তাহলীল পড়ানো,
২। কুরআন খতম পড়ানো মৃত ব্যক্তির চার পাশে বসে কুরআন পাঠ কর,
৩। গোসলের জন্য গরম পানি দেওয়ার জন্য পাক ঘরের চুলা বাদ দিয়ে বাইরে চুলা করে গরম পানি দেয়া,
৪। মৃত ব্যক্তিকে যেখানে গোসল দেওয়া হয় সে স্থান ৪ দিন কিনবা ৪০ দিন পর্যন্ত বেড়া দিয়ে সংরক্ষন করা এবং রাতের বেলায় সেখানে মোম, হ্যারিকেন বা বৈদ্যতিক বাতি দিয়ে আলোকিত করে রাখা,
৫। জানাযা নিয়ে যাওয়ার সময় আল্লাহু রাব্বী, মুহাম্মাদুন নাবী কিংবা কালিমা শাহাদাৎ পাঠ করা,
৬। জানাযা কবর স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় খাটিয়ার উপর আগর বাতি জ্বালানো এবং জানাযার যাত্রীদের উপর গোলাপ জল ছিটানো,
৭। কবর স্থানে জানাযা নেয়ার সময় খাতিয়াকে ছাতা বা কোন আচ্ছাদন দিয়ে ছায়াদান করে নিয়ে যাওয়া,
৮। জানাযার ছালাত শেষে “এ মানুষটি কেমন ছিল” উপস্থিত সবাই “বেশ ভাল ছিল” একথা বলা।
৯। জানাযার ছালাতের পূর্বে মৃত ব্যক্তির স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেয়া,
১০। জানাযা পড়ানোর সময় ইমামের একখণ্ড সাদা কাপড় জায়নামায হিসেবে ব্যবহার করা যা মূলত কাফনের কাপড়ের অংশ বিশেষ,
১১। জানাযার ছালাত পড়ার পর পুনরায় খাটিয়ার সামনে দু’আ করা ঐ সময় ক্বিয়াম করা ছালাত ও সালাম পেশ করা,
১২। জানাযার ছালাতের পর মৃত ব্যক্তিকে শেষ বারের মত দেখার জন্য মুখের কাফন খোলা,
১৩। কাফনের উপর যে কোন রকমের দু’আ লিখে দেয়া কিংবা দু’আ লিখিত কাপড়খণ্ড কাফনের সাথে লাগিয়ে দেয়া,
১৪। কোন কাপড় খণ্ডের উপর কালিমা লিখে ঐ কাপড় খণ্ড কবরের ভেতর মৃতের ডান পাশে মুখ বরাবর কবরের দেয়ালে টাঙ্গিয়ে দেয়া,
১৫। কবরের উপর পুস্পস্তবক অর্পণ করা,
১৬। দাফন করার সময় প্রথম তিন অঞ্জলি মাটি দেওয়ার ক্ষেত্রে মিনহা খালাকনাকুম ওয়া মিনহা… কুরআন মাজীদের এ আয়াত পাঠ করা,
১৭। দাফনের পর দু’আ করার পূর্বে একবার সূরা ফাতিহা, তিনবার সূরা ইখলাছ, একবার সূরা ফালাক্ব, একবার সূরা নাস এভাবে কুরআন মাজীদ থেকে কোন সূরা বা আয়াত পাঠ করা,
১৮। দাফন ও দু’আ শেষে সবাই চলে আসার পর একজন বসে কবর তালক্বীন করা, কবর পাকা করা ও তাতে মৃত ব্যকির নাম ফলক করা,
১৯। কবরের উপর ঘর তৈরি করা বা মাযার নির্মাণ করা,
২০। মৃত্যুর পর চার দিন পর্যন্ত কিংবা চল্লিশ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন ফাতিহা পড়ানো,
২১। মৃত ব্যক্তির বাড়িতে তিন দিন পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজন কত্রিক পালাক্রমে খানা পাঠানো,
২২। মৃত্যুর পর চার দিন কিংবা চল্লিশ দিন পর্যন্ত মোল্লা – মৌলভী দিয়ে প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে কবর পাহারা দেয়া,
২৩। মৃত ব্যক্তির বাড়িতে দিন দিন পর্যন্ত চুলা না জ্বালানো ও খানা পাক না করা,
২৪। মৃত ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিত্ব কিংবা জাতীয় নেতা-নেত্রী হলে অথবা সামরিক ব্যক্তি হলে দাফনের সময় তোপধ্বনি করা ও যুদ্ধের বাজনা বাজানো,
২৫। জানাযার ছালাতের সময় জুতা-স্যান্ডেল পাক থাকলেও খুলে রাখা( সুন্নাত হল জুতা-স্যান্ডেল খুলে না রাখা),
২৬। জানাযার ছালাতে প্রথম তাকবীরের পর ‘ছানা পড়া’(সুন্নাত হল ‘ছানা না পড়ে সূরা ফাতিহা পড়া’
২৭। মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় আযান দেয়া,
২৮। নেককার বা বুযুর্গ ব্যক্তি হিসেবে কোন কবরে বিছানা-বালিশ দেয়া,
২৯। মৃত্যুর পূর্বেই কবর খনন করে রাখা,
৩০। মৃত ব্যক্তির কাযা নামায থাকলে কিংবা মৃত ব্যক্তি বেনামাযী হলে তার নামাযের আর্থিক কাফফারা হিসাব করে কাফফারা আদায় করা এবং মৃত ব্যক্তি গরীব লোক হলে কাফফারার পরিবর্তে একটি কুরআন মাজীদ কাউকে হাদীয়া প্রদান করে কাফফারা এসক্বাত্ব(দূরীভূত করা) ইত্যাদি ইত্যাদি।